জয়পুরহাটের কালাইয়ে আলোচিত সেই কিডনির হাটে বেচাকেনা চক্রের ২ জন দালালকে ঢাকা থেকে আটক করেছে জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) পুলিশ। সোমবার জেলা গোয়েন্দা শাখা পুলিশের একটি টিম ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করে রাতেই জয়পুরহাটে ফিরে আসেন।
মঙ্গলবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে কিডনি বেচাকেনা চক্রের দালাল সদস্যদের আটকের বিষয় নিশ্চিত করেছেন পুলিশ সুপার মাছুম আহম্মদ ভূঞা। তিনি আরও জানান, এর আগে গত ১৪ মে কালাই ও পাঁচবিবি উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে অভিযান চালিয়ে কিডনি বেচাকেনা চক্রের সাথে জড়িত আরও ৭ দালাল সদস্যকে আটক করাও হয়েছিল।
ঢাকা থেকে আটক দালাল চক্রের সদস্যরা হলেন, কালাইয়ের উদয়পুর ইউনিয়নের টাকাহুত গ্রামের মৃত বেলায়েত হোসেন সরকারের ছেলে আব্দুল গোফফার সরকার (৪৫) ও একই উপজেলার জয়পুর-বহুতি গ্রামের পুরাতন দালাল আব্দুস সাত্তারের ছেলে নূর আফতাব (৪২)।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মাছুম আহম্মদ ভূঞা সাংবাদিকদের জানান, অবৈধভাবে কিডনি বেচাকেনা বন্ধ করতে ১৪ মে আটক দালালদের তথ্য অনুযায়ী গত সোমবার দিনভর ডিবি পুলিশের একটি টিম ঢাকা শহরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ২ জন দালাল সদস্যকে আটক করে। আটক দালালরা দীর্ঘদিন ধরে কালাই উপজেলার নিরীহ ও হতদরিদ্র মানুষদের ফুঁসলিয়ে টাকার লোভ দেখিয়ে নারী-পুরুষদের কিডনি বিক্রি করে আসছিলেন।
তিনি আরও জানান, এসব মানুষরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দালালদের খপ্পরে পরে প্রথমে ৪/৫ লাখ টাকায় চুক্তিতে তাদের কিডনি বিক্রি করে দেন। ভারত ও দুবাইসহ বিভিন্ন দেশে গিয়ে কিডনি দিয়ে নামমাত্র চিকিৎসা নিয়ে যখন দেশে ফিরেন, তখন দালালরা বিমানবন্দরেই তাদের হাতে ১/২ লাখ টাকা ধরে দিয়ে সেখান থেকে বিদায় করেন। কিডনি দাতারা নিজের অঙ্গ বিক্রি করে ঝুঁকি নিয়ে জীবন অতিবাহিত করলেও লাভবান হচ্ছেন এসব দালালরা।
আবার নিজের কিডনি বিক্রি করে প্রতারিত হয়ে নতুন করে দালাল বনে যাচ্ছেন তারা। আটক দালালরা কিডনি বেচাকেনার সাথে জড়িত রয়েছেন বলে স্বীকার করেছেন। কিডনি বেচাকেনা প্রতিরোধে দালাল চক্রের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) ফারজানা হোসেন, সদর সার্কেল মোসফেকুর রহমান, পাঁচবিবি সার্কেল ইশতিয়াক আলমসহ পুলিশের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তারা।