দিনাজপুর সংবাদাতাঃ দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটের ইউএনও ওয়াহিদা খানমের বাবা ওমর আলী শেখের কোমরের নিচের অংশ পুরোটাই অবশ হয়ে গেছে। দুই হাতও ঠিকমতো কাজ করছে না।
ওমর আলী শেখ কথা বলতে ও খেতে পারলেও চলাচল করতে পারছেন না। আপাতত অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন না হলেও পুরোপুরি সুস্থ হতে তার দীর্ঘ সময় লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। এছাড়া তাকে রংপুর থেকে ঢাকায় নেয়া হতে পারেও বলে জানান তারা।
শনিবার দুপুরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে ওমর আলীর ছেলে শেখ ফরিদ উদ্দীনের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে ওমর আলীকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরোসার্জারি ওয়ার্ড থেকে তিনতলার ভিআইপি কেবিনে নেয়া হয়।
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের প্রধান ডা. তোফায়েল হোসেন ভূঁইয়া বলেন, ওমর আলী শেখের আগে থেকে ডায়াবেটিস ছিল। ঘটনার রাতে তিনি ঘাড়ে আঘাত পান। এতে স্পাইনাল কর্ডে গুরুতর আঘাত লাগে তার। সাধারণত এ ধরনের জটিলতায় চার হাত-পা অবশ হয়ে যায়। এক্ষেত্রে তার দুই হাত কিছুটা সচল থাকলেও নাভির নিচ থেকে পুরো নিচের অংশ অবশ হয়ে গেছে।
ডা. তোফায়েল হোসেন ভূঁইয়া আরো বলেন, সাধারণত এ ধরনের সমস্যা সেরে উঠতে দুই থেকে তিন মাস পর্যন্ত সময় লাগে। আপাতত তার অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন না হলেও দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা প্রয়োজন। একটি চিকিৎসক দলের মাধ্যমে তাকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজনে তার স্বজনরা ঢাকায় নিতে চাইলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ওমর আলী শেখের ছেলে বগুড়ার কাহালু থানার ওসি শেখ ফরিদ উদ্দিন বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে হাসপাতালে ভর্তির পর থেকে বাবার এ সমস্যা দেখা দেয়। বিষয়টি রংপুরের ডিসিকে জানানো হয়েছে। আপাতত ঢাকায় নেয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি। এখানকার পরীক্ষা-নিরীক্ষার রিপোর্ট ঢাকায় পাঠানো হবে। সেখানকার চিকৎসকরা রিপোর্ট দেখে ঢাকায় নিতে বললে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
এ বিষয়ে রংপুরের ডিসি আসিব আহসান বলেন, ওমর আলী শেখের শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত ও রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক এবং রোগীর স্বজনরা ঢাকায় নেয়ার জন্য বললে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বুধবার রাতে দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটের ইউএনও ওয়াহিদা খানম ও তার বাবা ওমর আলীকে কুপিয়ে জখম করে দুর্বৃত্তরা।
পরদিন সকালে আহত বাবা-মেয়েকে প্রথমে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে ইউএনও ওয়াহিদাকে বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টারে ঢাকায় নেয়া হয়। তিনি এখন ঢাকার আগারগাঁওয়ে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতে ঘোড়াঘাট থানায় মামলা করেন ইউএনও ওয়াহিদার ভাই শেখ ফরিদ।
সাম্প্রতিক কমেন্ট